বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০১২

নারী-( ২৫.০৭.১২)

 

 

নারী

 

নারী যখন দূরে থাকে তখন রহস্যময়ী, অহংকারী, দূবোর্ধ্য, জটিল কিংবা অচেনা মনে হয়।

যখন কাছে আসে তখন মনে হয় প্রাণ খোলা, অন্তরঙ্গ, উদার, কোমল, ভীতু, বুদ্ধিমতি কিংবা সরল।

যখন ভালোবাসি তখন মনে হয় প্রেয়সি, অপরূপা, সঙ্গী, ভালোবাসার সায়র, মানসী কিংবা প্রাণের বিভা।

যখন জীবনে জড়িয়ে নেই তখন মনে হয় পূর্নাঙ্গী, অর্ধাঙ্গী, সাহসিনী, বিশ্বস্ত, ভাগ্যদেবী কিংবা বন্ধু।

যখন  মা হয় তখন মনে হয় স্নেহময়ী, দায়িত্বশীল, প্রিয়জন কিংবা অপরিহার্য ছায়া।

বয়োবৃদ্ধ কালে মনে হয় দুখের সাথী, চিরসাথী, ভালোবাসর মন্ত্র, বেদনাশ্রয় কিংবা বিদায় বেলার গান।

শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১২

উদাস পথিক--কবিতা ( ২১.৭.২০১২)

 

উদাস পথিক

 প্রভাত রেখা রবির সাথে উঠল দিগন্তে,
সময় রেখা চলছে ছুটে আপন অনন্তে।
    তারই মাঝে আমি যে এক আপন ভোলা কবি,
রং তুলি নেই শুভ্র খাতায় আঁকছি হরেক ছবি।
কালির আঁচর সাদার ওপর রং ছাড়া রং খেলা,
আপন বেশে চলছে যেন নব প্রানের মেল।
আত্মভোলা, উদাস মনে চলছি অজান দেশে,
হয়ত যেথা স্বপ্ন গুলি ধরায় এসে মেশে।
হয়ত বা এক রাখাল ছেলে সোনার বাঁশি হাতে,
মুক্ত ঝড়া প্রান কারা সুর বাজায় গভীর রাতে।
হয়ত সেথা স্বপ্ন গুলি রঙিন হয়ে সাজে,
প্রকৃতিটাও লুকিয়ে থাকে নব বধূর লাজে।
আমি যে এক উদাস পথিক, পদ্যে মুক্ত ছন্দ;
জীবন মরন খেলার  মাঝে অজানা এক দ্বন্দ্ব।


নিশিথের যাত্রী- কবিতা ( ২১.৭.২০১২)


নিশিথের যাত্রী 

বকুল ঝরা রাত্রি বেলা, শিউলি ঝরা প্রাতে,
হাঁটছি একা সবুজ পথে যাবে আমার সাথে?
আগুন ঝরা ফাগুন সাঁঝে হাসনা হেনার ঘ্রানে,
হৃদয় দোলায়, আকাশ ভরে তারার গানে গানে।
সন্ধ্যা তারা রাত্রি শেষে শুক তারারই বেশে,
গান শুনিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে ফিরল আপন দেশ।
চললে কোথা? সুধাই যখন বললে খানিক হেসে,
যেথায় আমার আপন নিলয় রূপকথারই  দেশে।
সঙ্গী ছিল রাতের আঁধার, আকাশ ভরা  তারা,
মাতম তোলা ফুলের সুবাস,রাতের প্রাণের সাড়া।

বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১২

যোগ-ভাগ -- কবিতা (১৯.০৭.২০১২)


যোগ-ভাগ

এসো................., বোসো।

বসতে তোমায় নয়ন ভাঙা কান্না দেবো।
আামার দুখের ভাগও দেবো,
অমাবস্যার আঁধার দেবো, কাঠ ফাঁটা রোদ, বুক ফাঁটা মাঠ,
ধুতুরা ফুলের গন্ধ দেবো।
আর কি নেবে বলো?

পোড়ো বাড়ির খাঁ খাঁ করা শূন্যতা নেবে?
কিংবা বেতাল নদীর পার ভাঙা ঢেউ, শোঁ শোঁ করা তীক্ষ্ম স্বরের বাতাস?
পুত্র হারা মায়ের বুকের ফেনিয়ে ওঠা চাপা কান্না,
রাত্রি ভর মরা খেকো হায়েনা গুলির
নাক উঁচু করা জ্বলজ্বলে হিংস্র দৃষ্টি কিংবা বুক কাঁপানো, তাচ্ছিল্য ভরা
বিদঘুটে হাসি?

ওই দেখো, তোমার জন্য শেয়ালগুলো অর্ধগলিত, সদ্য কবর দেয়া
উৎকট গন্ধ যুক্ত লাশগুলো তুলে এনেছে।
চাইলে কোনো সরু প্রবাহিনীর চোর স্রোতে ভেসে যাওয়া
মৃত গরু গুলির ওপর বসে থাকা কালো তিক্ষ্ম চঞ্চু কাকও এনে দিতে পারি।

ভেবে পাইনে শকুনগুলি কোথায় হারিয়ে গেলো !
থাকলে ওই লাশ খেকো শকুনগুলিও তোমায় দিতাম।
আর কিছু চাই বলো?

আঁধার রাতে ভীষণ গহীনের জমে থাকা আদিম ভীতি গুলোর
জায়গা হচ্ছে না কোথাও।
চাই নাকি কিছুটা সেখানকার?
নিযুত-কোটি ভুখা-নাঙ্গার দুহাত তোলা অভিশাপ তো রয়েই গেলো।
দুরারোগ্য কষ্ট দেয়া রোগগুলো শরীর খুঁজছে,
ওই ভিখিরী গুলোর রক্ত খেতে খেতে সব ফুরিয়ে গেছে;
তাই নতুন দেহ দরকার।

মানুষের হৃদয়ে বয়ে যাওয়া দুখের ফল্গুধারার খোঁজ কেউ রাখে না,
কেউ একটু যোগ-ভাগ করতে চায় না।
আমার ঘরে এলে এর হিস্যাও কিন্তু নিতে হবে।
নেবে না? বলো নেবে না?
বলো নেবে না?

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১২

বৃষ্টির গান-কবিতা(১৮.৭.২০১২)

              

             বৃষ্টির গান

বৃষ্টি,  আমায় একটা গান শোনাবে তোমার সুরে?
তখন, আপন করে নেবো তোমায় যায়গা দেবো হৃদয় জুড়ে।
গানটি হবে শব্দ বিহীন বিনি সুরে গাঁথা,
আমার নিজের না বলা সব কথা।

তবে শুরু করো, গগন ঢাকো মোষ রাঙা সব মেঘে,
আর পবন ঘোড়া দাও ছুটিয়ে পাগলা করা বেগে।
পবন ঘোড়ার সওয়ার হবো সেজে বীরের বেশে,
সক্কলেরে তাক লাগিয়ে ঘুড়ব আমি হাওয়ার দেশে।

নিজ বাড়ির ওই ভাঙা কোঠায় পবন ঘোড়া ছেড়ে,
পুকুর পাড়ে গানের ঘরে বসব আসন গেড়ে।
ঠিক তখনই বিনি সুরের তাল বেতালে বৃষ্টি হয়ে জুড়বে গান,
তাতেই হবে। ভুলে যাবো হৃদয় ভাঙা সকল অভিমান।

শ্রাবণী- কবিতা(১৮.৭.২০১২)



                

                  শ্রাবণী

আমি কবি ছিলাম না, কবি হতে চাইও নি, কিন্তু বিলের পাশে
বর্ষার আকাশে মেঘেরা যখন ভাসে
তখন হঠাৎ তোমর সাথে দেখা চিন্তিত মুখে
তোমার একটি নাম খুঁজতে থাকি চারদিকে চোখে
পরার মতো কোনো নাম দেখিনা, অন্তত যা দিয়ে এক কথায়
তোমাকে প্রকাশ করা যায়

তোমার চোখের দিক যখন তাকাই তখন মনে হয় বিলের জলে
পানকৌরির খেলা কিংবা সৌন্দর্য যেন কথা বলে
তোমার গোলাপি আভার ঠোঁটের দিকে যখন দেখি
তখন মনে হয় একি
স্বর্গীয় সৌন্দর্যের দেবী, নাকি সৌন্দর্য পসারিণী?
তোমায় যিনি
রং-তুলি দিয়ে এঁকেছিলেন তিনি নিজেও হয়ত জানেন না তোমায় কতখানি
সুন্দর করে এঁকেছিলেন তবে আমি জানি

তাই তোমার নাম দিলাম জংলী বেলি,
নাকি জলকেলি
হতে পারো বসন্তের কোকিল,
না হয় বর্ষার যৌবন টলটেল বিল
হয়ত বৌকথা-কও পাখির মেলে থাকা আঁখি,
শালিকের ঝাঁকের কিচির-মিচির; কিযে নাম রাখি?
বিকেলের রোদ্দুর নাকি মেঘ ভাঙা জল
দূর নীলাচল

তবে সব সৌন্দর্যের আঁধার বর্ষার কাছে আমি চির ঋণী
তোমার নাম দিলাম শ্রাবণী

বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই, ২০১২

ফিরিয়ে নেয়া প্রেমাঞ্জলি-১৩.০৭.২০১২

ফিরিয়ে নেয়া প্রেমাঞ্জলি


তোমার পদতল থেকে ভালোবাসার শেষ
অঞ্জলি খানি যখন তুলে নিলাম, তুমি খুশি হয়ে বললে বেশ
নিয়ে যাও।’’আমার মনের অবস্থাটা একবারও বোঝার চেষ্টা
করলে না। এ হৃদয়ে তোমার প্রেমের তেষ্টা
এমন মারাত্মক ছিল যে নিজের প্রাণটা
বিলিয়ে দিতে ইচ্ছে করল। কিন্তু ধরণীর প্রতি টানটা
কাটিয়ে উঠতে পারলাম না। কারণ বিশ্বেশ্বর আমাকে কেন
সৃষ্টি করেছেন তা এখনও খুঁজছি? মনে হল জীবনটা যেন
রাতের চাঁদের কারণে ধরণীতে আলো আঁধারির খেলা।
কখনও ডুবু ডুবু করে জীবনের ভেলা
ভেসে ওঠে,  কখনও সটান মাথা তুলে
সোজা হয়ে থাকে। তবুও তোমাকে ভুলে
থাকাটা কি করে সম্ভব তাই ভেবে
পাই না। ভালোবাসার প্রস্রবনের নেবে
আসা উষ্ণ তরল
 কি রোখা যায়? না কেউ রুখতে পেরেছে? সরল
সমীকরণের মত জীবনটা এখন বহুপদী ঘাত
হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আমি ঘাত প্রতিঘাত
দিয়ে ঘেরা অদৃষ্ট নিয়ন্ত্রিত এক পুতুল।
অদৃষ্ট নিয়ন্ত্রিত পুতুলের এ ভালোবাসাই অনির্ধারিত ভুল।

ভালোবাসার তরুর আত্মদান-১৩.০৭.২০১২

ভালোবাসার তরুর আত্মদান


অনেক শখ করে একটি গোলাপ চারা
এনেছিলাম। নাম দিয়েছিলাম ভালোবাসার তরু
বারান্দার কোণায় টবে যায়গাও করে দিয়েছিলাম।
অনেক ভালোবেসে যত্ম নিতাম, রোজ জলসেচতাম আর
প্রতিক্ষায় থাকতাম প্রথম কলির।
মনেমনে প্রথম কলিটার নাম
ঠিক করে রেখেছিলাম ভালোবাসার কলি

ইচ্ছে ছিল ভালোবাসার কলি হবে তোমার প্রতি
আমার প্রথম নৈবেদ্য।
কিন্তু তুমি আমার প্রতি বিমুখ হয়ে রইলে। ভালোবাসার তরুতে
ভালোবাসার কলি এলো না।
সময় বয়ে বয়ে গেল অনেক। কিন্তু তবুও আমার প্রতি তোমার
বিমুখতা ঘুঁচল না, ভালোবাসার তরুতে
ভালোবাসার কলিও এলো না।

এরই মধ্যে ভালোবাসার তরুও বুঝতে পেরেছে
তার এ জনম মিথ্যে হতে চলেছে।
তার ভালোবাসার কলির কখনই তোমার প্রতি
আমার প্রথম নৈবেদ্য হওয়া হবে না। 
তা হয় না.............................।

ভালোবাসার তরু ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে লাগল।
এক সময় ভালোবাসার তরু করুণ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল,  
নিঃশব্দ মৃত্যু, নীরব আত্মদান।